৪২ ফুট গভীরেও সন্ধান মেলেনি সাজিদের, নতুন সিদ্ধান্ত নিলো ফায়ার সার্ভিস

৪২ ফুট গভীরেও সন্ধান মেলেনি সাজিদের, নতুন সিদ্ধান্ত নিলো ফায়ার সার্ভিস ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৬:৫৪, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজশাহীর তানোরের কয়েলের হাট মধ্যপাড়া এলাকায় দুই বছরের শিশু সাজিদকে উদ্ধার করার প্রচেষ্টা ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও সফল হয়নি।

এখন পর্যন্ত ৪২ ফুট পর্যন্ত খনন করেও ফায়ার সার্ভিস শিশুটির কোনো অবস্থান শনাক্ত করতে পারেনি। তাই নতুন করে আরও ১০ ফুট অতিরিক্ত গভীর পর্যন্ত খনন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টা পর্যন্ত উদ্ধারকাজ অব্যাহত ছিল।

ঘটনাস্থলে ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম জানান, গর্তটির গভীরতা ১৫০ থেকে ২০০ ফুটের মধ্যে হতে পারে। সেই কারণে শিশুটি ওই গর্তের যেকোনো স্তরে আটকে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিশ্বে এমন কোনো প্রযুক্তি নেই যা এত গভীর নলকূপ সদৃশ সরু গর্ত থেকে মুহূর্তে কাউকে তুলতে পারে। নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে মূল গর্তের পাশ দিয়ে বিকল্প গর্ত খনন করে শিশু পর্যন্ত পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে। উন্নত দেশগুলোতেও এমন গভীরে পৌঁছাতে ৭৫ থেকে ৭৮ ঘণ্টা সময় লাগে।

তিনি আরও জানান, প্রথম ধাপের অনুসন্ধানে ৩৫ ফুট পর্যন্ত ক্যামেরা নামানো হয়েছিল, কিন্তু ওপর থেকে পড়া মাটি ও খড়ের কারণে ক্যামেরায় কিছু দেখা যায়নি। এখন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা প্রায় ৪৫ ফুট পর্যন্ত নামতে সক্ষম হয়েছেন। উদ্ধার কাজের জন্য সম্ভাব্য সব প্রযুক্তি ব্যবহারের চেষ্টা চলছে।

এর আগে বুধবার দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কয়েক দফায় গর্তে ক্যামেরা নামিয়েছিলেন। কিন্তু গর্তের ভেতর আবর্জনা জমে থাকায় শিশুটির দেখা পাওয়া যায়নি। একই দিন দুপুরে সাজিদের কান্নার আওয়াজ শোনা গিয়েছিল, যা উদ্ধারকর্মীদের আশাবাদী করে রেখেছে।

শিশুটির মা রুনা খাতুন জানান, বুধবার দুপুরে তিনি দুই সন্তানের একজনকে কোলে নিয়ে মাঠের দিকে যাচ্ছিলেন, আর সাজিদ হাত ধরে পাশে হাঁটছিল। এক পর্যায়ে পেছন থেকে ছেলে "মা" বলে ডাক দিলে তিনি ঘুরে তাকান এবং দেখেন সাজিদ গর্তে পড়ে গেছে। গর্তটির মুখ খড় দিয়ে ঢেকে রাখা থাকায় সেই জায়গাটি যে খোলা ছিল তা বুঝতে পারেননি। মুহূর্তের মধ্যেই শিশুটি নিচের দিকে সরে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে জমির মালিক কছির উদ্দিন সেচকাজের জন্য সেমিডিপ নলকূপ খনন করেছিলেন। কিন্তু পানি না পাওয়ায় কাজটি অসম্পূর্ণ রেখে দেওয়া হয়। ফলে বিপজ্জনক এ গর্তটি খোলা অবস্থায় পড়ে থাকে। গতকাল সেই অবহেলা ভয়াবহ বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সাজিদের জন্য। স্থানীয়রা প্রথমে নিজস্ব উদ্যোগে উদ্ধার করতে গেলেও ব্যর্থ হন, পরে তারা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement