৬০ ফুট নিচ থেকে সাজিদের উদ্ধারের সর্বশেষ তথ্য

৬০ ফুট নিচ থেকে সাজিদের উদ্ধারের সর্বশেষ তথ্য ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২২:৩৮, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজশাহীর তানোরে নলকূপের একটি পরিত্যক্ত ও বিপজ্জনক গর্তে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘিরে টানা ৩২ ঘণ্টার উদ্ধার অভিযানের পর দুই বছরের শিশু সাজিদকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রায় ৬০ ফুট গভীর গর্তের তলদেশ থেকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাকে তুলে আনতে সক্ষম হন। উদ্ধার করার পর শিশুটিকে দ্রুত তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয় এবং সেখানে তার প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়।

ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা জানান, রাত ৯টার দিকে শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়। এরপর দ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়, যেখানে তার শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত মূল্যায়ন করবেন চিকিৎসকেরা।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেনটেইন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীও শিশুটিকে উদ্ধার এবং পরবর্তী চিকিৎসা ব্যবস্থার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা খান জানান, শিশুটিকে সফলভাবে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় স্বস্তি ফিরে এসেছে পুরো এলাকায়।

নিখোঁজ হওয়ার মুহূর্তটির বর্ণনা দিয়েছেন শিশুটির মা রুনা খাতুন। তিনি জানান, দুপুরের দিকে দু’টি সন্তানকে নিয়ে বাড়ির পাশের মাঠের দিকে যাচ্ছিলেন। কোলে একটি শিশু ছিল, আর সাজিদ হাঁটছিল পাশে।

হঠাৎ শিশুটি ‘মা’ বলে চিৎকার দিলে তিনি পিছনে তাকিয়ে আর তাকে দেখতে পাননি। খড় দিয়ে ঢাকা ছিল বলে গর্তটি চোখে পড়েনি। নিচ থেকে সাজিদের ‘মা, মা’ ডাক শোনা গেলে তিনি বুঝতে পারেন, সন্তানটি গর্তে পড়ে গেছে। স্থানীয় লোকজনকে ডাকতে ডাকতেই শিশুটি আরও নিচে নেমে যায়।

স্থানীয়দের মতে, এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে গেছে বলে গভীর নলকূপ বসানোর ওপর বিধিনিষেধ আছে। তবুও পানির স্তর পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে কছির উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি আগে যে গর্তটি খনন করেছিলেন, সেটি পরে ভরাট করা হলেও বর্ষায় মাটি ধসে আবার গর্ত তৈরি হয়। বুধবার দুপুরে সেই গর্তেই পড়ে যায় সাজিদ, কোয়েলহাট পূর্বপাড়ার মো. রাকিবের সন্তান।

ঘটনার পর দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এক্সকাভেটর দিয়ে খনন শুরু করে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট।

তাদের সঙ্গে যোগ দেয় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। প্রথমে ছোট এক্সকাভেটর দিয়ে খনন করা হলেও রাতের পর বড় এক্সকাভেটর এনে আরও গভীর খনন চালানো হয়। দীর্ঘ প্রচেষ্টার শেষে অবশেষে ৩২ ঘণ্টা পর শিশুটিকে জীবিত অবস্থায় বের করে আনতে সক্ষম হয় উদ্ধারকারী দল।

এই দীর্ঘ সময়ের উত্তেজনা, হতাশা এবং আশা-নির্ভর অপেক্ষার পর সাজিদকে উদ্ধার করার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন তার পরিবারসহ স্থানীয় সবাই।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement