বরিশালে শিক্ষার্থী ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এর জেরে জেলার সব অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটে বাস চলাচল রোববার (১৬ নভেম্বর) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।
পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাসগুলোর ক্ষতিপূরণ না পাওয়া পর্যন্ত তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করবেন না।
হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাধারণ যাত্রীরা মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েছেন। সীমিত সংখ্যক মাহিন্দ্রা ও সিএনজি অটোরিকশা চললেও ভাড়া বেড়ে গেছে দ্বিগুণেরও বেশি, ফলে যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর বরিশাল কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে ‘হাফ ভাড়া’ নিয়ে বিবাদের জেরে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাস শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে যায়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা কয়েকটি বাস ভাঙচুর করে এবং একটি বাসে অগ্নিসংযোগ পর্যন্ত করে। ফলে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা রাত ৯টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে টার্মিনাল থেকে আর কোনো বাস ছাড়া হয়নি।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা রোববার সকাল থেকে প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে সব বাস বন্ধ করে দেন।
নথুল্লাবাদ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহাদাত হোসেন লিটন বলেন, তারা তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন। ভাঙচুর হওয়া বাসগুলোর ক্ষতিপূরণ, আহত শ্রমিকদের চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হওয়ার নিশ্চয়তা তারা চাইছেন।
বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন জানান, কমপক্ষে দুইশো বাস ভাঙচুর করা হয়েছে এবং কাউন্টার লুটপাট হয়েছে বলে দাবি করছেন তারা। ক্ষতির পরিমাণ অন্তত তিন কোটি টাকা বলে উল্লেখ করেন তিনি। মালিক সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেন জানান, বৈঠকের পর বাস চলাচল পুনরায় শুরু করা হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
এদিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিএম কলেজের আট শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহত শিক্ষার্থী আবু বক্কর অভিযোগ করে বলেন, শনিবার তাদের ওপর আকস্মিকভাবে হামলা চালানো হয়। অনেক শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরলেও তারা ন্যায় বিচার দাবি করছেন।
