মহাবিশ্ব যেন জীবন্ত এক সিনেমার মতো, যেখানে গ্রহাণু ছুটে চলে আর নানা রঙের ধূমকেতু ধেয়ে আসে। অনেকগুলি বস্তু বিজ্ঞানীদের চোখে ধরা পড়ে, তবে এর মধ্যে অনেকই অদৃশ্য থেকে যায়।
সম্প্রতি জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একটি রহস্যময় ধূমকেতু পর্যবেক্ষণ করেছেন, যা আমাদের সৌরজগতের মধ্য দিয়ে দ্রুত পৃথিবী ও সূর্যের দিকে এগিয়ে আসছে। নতুন এই ধূমকেতুকে কিছু ক্ষেত্রে আলোচিত আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু ৩আই/অ্যাটলাসের সঙ্গে তুলনা করা হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি সম্ভবত আমাদের সৌরজগতের মধ্যেই তৈরি হয়েছে। ৩আই/অ্যাটলাসের মতো এটি বাইরের নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে আসেনি।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ২ থেকে ৫ নভেম্বরের মধ্যে এই ধূমকেতুটি পর্যবেক্ষণ করে মাইনর প্ল্যানেট সেন্টারকে রিপোর্ট করেন। মাইনর প্ল্যানেট সেন্টার সৌরজগতের নতুন গ্রহাণু, ধূমকেতু ও অন্যান্য ছোট বস্তুর তথ্য সংগ্রহ, ট্র্যাক এবং রেকর্ড রাখে। আনুষ্ঠানিকভাবে এই ধূমকেতু সি/২০২৫ ভি১ (বোরিসভ) নামে পরিচিত। এটি প্রথম আবিষ্কার করেন ইউক্রেনের ক্রিমিয়ার শৌখিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী গেন্নাদি বোরিসভ। ধূমকেতুটি ১১ নভেম্বর পৃথিবীর কাছে অতিক্রম করবে এবং ১৬ নভেম্বর সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি বিন্দুতে পৌঁছাবে। যদিও এটি পৃথিবীর কাছে আসে, তবুও চাঁদ থেকে প্রায় ২৭০ গুণ দূরে, প্রায় ৬ কোটি ৪ লাখ মাইল দূরে অবস্থান করবে।
গেন্নাদি বোরিসভ পূর্বেও আন্তনাক্ষত্রিক ধূমকেতু আবিষ্কারে সুপরিচিত। ২০১৯ সালে তিনি প্রথম আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু ২আই/বোরিসভ আবিষ্কার করেন। হার্ভার্ডের জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী আভি লোয়েব ৩আই/অ্যাটলাস নিয়ে গবেষণা করছেন এবং নতুন এই ধূমকেতুকে প্রায় আন্তনাক্ষত্রিক বলে অভিহিত করেছেন। তার মতে, ধূমকেতুটির কক্ষপথ সমতলের তুলনায় প্রায় ১১৩ ডিগ্রিতে অত্যন্ত ঝুঁকে আছে, যা সাধারণ ধূমকেতুর সঙ্গে তুলনায় ভিন্ন। এছাড়া, এতে সাধারণত দৃশ্যমান লেজ দেখা যায় না।
নতুন আবিষ্কৃত ধূমকেতুটি খালি চোখে দেখা কঠিন। শুধুমাত্র শক্তিশালী দুরবিন বা টেলিস্কোপ ব্যবহার করে এটিকে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। বর্তমানে এটি কন্যা রাশির দিকে অবস্থান করছে এবং বিজ্ঞানীরা এটি পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সূত্র: এনডিটিভি



































