পাবনায় প্রাণ ডেইরিতে ভেজাল দুধের ঘটনা পরিকল্পিত বলছেন আরএফএল গ্রপ

Published : ১৮:২২, ১১ আগস্ট ২০২৫
গত এক বছরে দুধের গুণগত মান ও নিরাপত্তায় অবহেলার কারণে ২৭ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, ২৮৩ খামারি থেকে দুধ সংগ্রহ বন্ধ, প্রাণ ডেইরি দুধ সংগ্রহ প্রক্রিয়া আরও কঠোর করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও মনিটরিং বাড়িয়েছে। পাবনার চাটমোহরের ছাইকোলা ইউনিয়নের প্রাণ ডেইরির গ্রামীণ দুধ সংগ্রহ কেন্দ্রে গত ২১ জুলাই ডিটারজেন্ট মিশ্রিত দুধ পাওয়ার ঘটনা স্থানীয় প্রশাসন দ্বারা তদন্ত করা হয়। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ এ ঘটনাটিকে পরিকল্পিত করে সংঘটিত অপরাধ উল্লেখ করেছে। রোববার রাজধানীর বাড্ডায় প্রাণ ডেইরির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল বলেন, প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে যে, দীর্ঘদিন ধরে নিম্নমানের দুধ সরবরাহে ব্যর্থ এক সংঘবদ্ধ চক্র এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
স্থানীয় কিছু কর্মীকে হাতিয়ার করে এই চক্র ডিটারজেন্ট মিশ্রিত দুধ সংগ্রহ কেন্দ্রে প্রবেশ করিয়ে প্রাণ ডেইরির সুনাম ক্ষুণ্নের চেষ্টা করেছে। প্রাণ ডেইরির এই ঘটনায় তিনজন কর্মকর্তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ডের পাশাপাশি সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া পাঁচ জন খামারির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কামরুজ্জামান কামাল আরও জানান, গত এক বছরে দুধের গুণগত মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রাণ ডেইরি ২৭ জন কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেছে এবং ২৮৩ জন দুধ সরবরাহকারী খামারি থেকে দুধ সংগ্রহ বন্ধ করেছে। প্রাণ ডেইরি দুধ সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণে চার ধাপে কঠোর পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা চালু করেছে, যার মাধ্যমে নিম্নমানের দুধ প্রধান প্রক্রিয়াজাতকেন্দ্রে পৌঁছানোর সুযোগ নেই। প্রাণ ডেইরি ইতোমধ্যে প্রাথমিক বাছাইয়ের মাধ্যমে ৪২ হাজার লিটার দুধ বাতিল করেছে। বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান বলেন, প্রাণ ডেইরি প্রক্রিয়াজাত পণ্য দেশ ও বিদেশে রপ্তানি করে, তাই এর সুনাম রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি।
সাম্প্রতিক ঘটনাকে একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ এ ধরনের অপপ্রচারে কোনোভাবেই পিছপা হবে না। প্রাণ ডেইরি নিরাপত্তা ও গুণগত মান নিশ্চিত করতে গ্রামীণ দুধ সংগ্রহ কেন্দ্রগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং জোরদার এবং খামারি ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালু করেছে। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা জানান, তারা প্রায় ১৬ হাজার খামারির সঙ্গে সরাসরি কাজ করে থাকে এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের কালো তালিকাভুক্ত করার কারণে ক্ষিপ্ত কিছু ব্যক্তি পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, প্রাণ-আরএফএল শুধু দেশের মানুষের জন্য নয়, আন্তর্জাতিক বাজারের জন্যও পণ্য উৎপাদন করে, তাই অপপ্রচারে তারা কোনোভাবেই আত্মসমর্পণ করবে না।
BD/S