পাবনার ঈশ্বরদীতে ৮টি কুকুরছানাকে বস্তায় ভরে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার মর্মান্তিক ঘটনার পর মা কুকুরটি সারাদিন ধরে ছুটোছুটি করে তার বাচ্চাদের খুঁজে বেড়াচ্ছে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের দরজার সামনে হতবিহ্বল অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় কুকুরটিকে। উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় তলার সামনে ঘুরে বেড়ানোর সেই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন অনেকে।
গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়—ইউএনওর কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে কুকুরটি অসহায়ভাবে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে। কর্মচারীরা তাড়ানোর চেষ্টা করলেও সেটি সরে যায়নি। পরে দুপুরে কয়েকজন আদর করে তাকে নিচে নামান। বিকেল পর্যন্ত সে উপজেলা পরিষদের আশপাশে ঘোরাফেরা করতে থাকে।
নিশি বেগম নামে এক নারী ৮টি কুকুরছানাকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বলা হয়, বাসার দরজার সামনে ছানাগুলোর ডাকাডাকিতে বিরক্ত হয়ে তিনি এ কাজ করেন। অভিযুক্ত নারী ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী। এ ঘটনার পর উপজেলা প্রশাসন ওই কর্মকর্তাকে সরকারি বাসা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে।
সোমবার রাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে নয়নকে তার কোয়ার্টার খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
অভিযুক্ত নিশি বেগম অবশ্য দাবি করেছেন—ছানাগুলোকে তিনি বাজারের ব্যাগে করে পুকুরপাড়ে একটি গাছের পাশে রেখে এসেছিলেন, কিন্তু কীভাবে তারা পানিতে পড়ে যায় তা তিনি জানেন না। তিনি নিজ হাতে পুকুরে ফেলেননি বলেও দাবি করেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত নিষ্ঠুর। ইতোমধ্যেই মা কুকুরটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে, তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৯ অনুযায়ী এই অপরাধে মামলা করার বিধান রয়েছে। অভিযুক্ত নারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এটি অমানবিক কাজ। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে এক দিনের মধ্যে কোয়ার্টার ছাড়তে বলা হয়েছে। মা কুকুরটির চিকিৎসার দায়িত্ব প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে দেওয়া হয়েছে।
—সূত্র: কালবেলা






























