ফেসবুক লাইভে বৃষ্টি জানালেন পর্ন জগতে যাওয়া কারণ

ফেসবুক লাইভে বৃষ্টি জানালেন পর্ন জগতে যাওয়া কারণ ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৯:২২, ২২ অক্টোবর ২০২৫

আন্তর্জাতিক পর্নোগ্রাফি সাইটে বাংলাদেশকে বিতর্কে জড়ানো দম্পতি বৃষ্টি ও আজিমকে অবশেষে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আন্তর্জাতিক পরিসরে ছড়িয়ে পড়া এই কনটেন্টের কারণে দেশীয় ও সামাজিক পরিমণ্ডলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।

গ্রেপ্তারের আগে বৃষ্টি ফেসবুকে লাইভে এসে নিজের জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন এবং বিতর্কিত বক্তব্য দেন। লাইভে তিনি অভিযোগ করেন, “আমাদের জীবনটা নষ্ট করেছে কুত্তালীগ। আমরা বিচার চাইতে গিয়ে পাইনি কোনো ন্যায়।” তিনি বলেন, “আমি খারাপ মানুষ, কিন্তু জানেন কি—আমি কেন খারাপ হয়েছি?”

বৃষ্টি জানান, মানুষ তাকে খ্রিস্টান ভেবে ভুল করে, অথচ তিনি মুসলিম। রাজনৈতিক অন্যায়, সমাজের অবহেলা ও আর্থিক কষ্টের কারণে তিনি এই পথে এসেছেন বলেও দাবি করেন। লাইভে তিনি বলেন, “আমি অন্যায় করেছি, কিন্তু আমার স্বামীর সঙ্গে করেছি, অন্য কারও সঙ্গে নয়।”

বৃষ্টি তাদের দারিদ্র্যের সময়কার কষ্টের গল্প শোনান—যখন খাবার না পেয়ে না খেয়ে থাকতে হয়েছে। তিনি জানান, একসময় গার্মেন্টসে কাজ শেখার পর চাকরি খুঁজতে গিয়ে নানা প্রস্তাব পেয়েছিলেন, যা ছিল অশালীন ও অবৈধ। সেই অভিজ্ঞতা তাকে ভেঙে দেয়, এবং ধীরে ধীরে তারা পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে জড়িয়ে পড়েন।

অনুসন্ধানী প্ল্যাটফর্ম দ্য ডিসেন্ট জানায়, ২০২৪ সালের ১৭ মে প্রথম ভিডিও প্রকাশের পর থেকে বৃষ্টি ও আজিম ১৭ মাসে ১১২টি কনটেন্ট তৈরি করেন, যা বিশ্বের জনপ্রিয় পর্ন সাইটগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। শুধু এক বছরেই তাদের ভিডিও দেখা হয়েছে প্রায় ২৬৭ মিলিয়ন বার।

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, পুরো কার্যক্রমটি বাংলাদেশ থেকেই পরিচালনা করেছেন তারা। বৃষ্টি নিজেকে পরিচয় দিতেন “বাংলাদেশের নাম্বার ওয়ান মডেল” হিসেবে, আর বর্তমানে তিনি বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম স্থানে আছেন বলেও দাবি প্রতিবেদনে।

তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া যায় বিলাসী জীবনের ছবি—টাকার স্তূপ, দামি গাড়ি, গাঁজা সেবনের ভিডিও, এবং নিজস্ব কনটেন্টের প্রচারণা। শুধু নিজেদের ভিডিও নয়, ৫৫ ডলার ‘ইনসেনটিভ’ দেখিয়ে অন্য তরুণ–তরুণীদেরও প্রলুব্ধ করতেন তারা। অনুসন্ধান বলছে, মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই যুগল প্রায় ১৫ হাজার মার্কিন ডলার আয় করেছেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী বৃষ্টি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বাসিন্দা। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই ঠিকানাটি তার প্রথম স্বামীর বাড়ি। স্থানীয়রা নিশ্চিত করেছেন, তিনি একসময় ওই পরিবারেরই পুত্রবধূ ছিলেন, প্রথম স্বামী পেশায় ছিলেন একজন জেলে।

বৃষ্টি ও আজিমের গ্রেপ্তারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে বিষয়টি। অনেকেই দাবি করছেন, এই ঘটনা শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের এক প্রতিচ্ছবি।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement