দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও এর আশেপাশের এলাকায় বর্তমানে একটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ অবস্থান করছে, যা অচিরেই ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বুধবার (২৬ নভেম্বর) অথবা বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) এই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সেনিয়ার’, যার অর্থ সিংহ।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন শ্রীলঙ্কা উপকূলীয় এলাকায় নতুন লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে। ইতিমধ্যেই গত শনিবার (২২ নভেম্বর) সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে মালাক্কা প্রণালী ও সংলগ্ন আন্দামান সাগরের উপর গভীর নিম্নচাপে রূপ নেবে এবং পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে।
ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, সোমবারই দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও দক্ষিণ আন্দামান সাগরে গভীর নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এটি আরও পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড়টি কোথায় আঘাত হানবে তা এখনও সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। আপাতত আন্দামানে প্রবল ঝড়-বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ভারতীয় আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সন্দীপ পট্টনায়ক জানিয়েছেন, সমুদ্রের বিশাল ক্ষেত্রফল এবং প্রশান্ত মহাসাগর থেকে আসা শক্তিশালী বাতাসের প্রভাবে লঘুচাপটি আরও শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শীতল বাতাসের প্রভাব কমে যাওয়ায় এটি আরও তীব্র হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশের বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিমও (বিডব্লিউওটি) জানিয়েছে, লঘুচাপটি ২৫ থেকে ২৭ নভেম্বরের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে রূপ নেবে এবং ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি এরপর ২৮-২৯ নভেম্বরের মধ্যে মধ্য ও পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে পৌঁছাতে পারে এবং আরও শক্তিশালী হয়ে উঠার আশঙ্কা রয়েছে।
পরিবেশগত অবস্থার উপর ভিত্তি করে ঘূর্ণিঝড়টি দিক পরিবর্তন করে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ১-২ ডিসেম্বরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে বাংলাদেশ উপকূলের মধ্যে কোনো অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। তবে সুগঠিত হওয়ার আগে এর আঘাতের সুনির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।
আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, ২৮-২৯ নভেম্বরের মধ্যে এটি মধ্য ও পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে পৌঁছাতে পারে এবং শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২৬ থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬০ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। বাংলাদেশে আঘাতের সুনির্দিষ্ট স্থান এখনও নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। স্থানীয় প্রশাসন ও মৎস্যজীবীদের অতি সতর্ক থাকার জন্য বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে।

































