সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদসহ মোট ১০৩ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা, চাঁদাদাবি ও মানবপাচারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নতুন করে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (২ নভেম্বর) ঢাকার মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন পুলিশের জমা দেওয়া প্রতিবেদনের ওপর বাদীর নারাজি আবেদন গ্রহণ করে এ নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে ডিবি পুলিশকে আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে নতুন প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মো. রাসেল আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে বাদীর অভিযোগগুলোকে অসত্য ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে আসামিদের অব্যাহতির সুপারিশ করেন এবং বাদী আলতাফ খানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান। তবে বাদী আলতাফ খান প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে নারাজি আবেদন দাখিল করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় আফিয়া ওভারসিজের প্রোপাইটর আলতাফ খান মামলাটি দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, ২৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ ও মানবপাচারের সঙ্গে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট জড়িত, যেখানে সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী, সাবেক আইজিপি, এবং মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তা সম্পৃক্ত ছিলেন।
মামলার বিবরণে আরও উল্লেখ রয়েছে, জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রায় দুই হাজার রিক্রুটিং এজেন্সি থাকলেও, মাফিয়া সিন্ডিকেট চক্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি ও জুলুমের মাধ্যমে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিল। সাবেক সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন অভিযোগের মুখে পড়েছেন নিজ সন্তানের মাধ্যমে সিন্ডিকেটে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে।
এছাড়া অভিযোগে বলা হয়, সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমেদ তার পরিবারের সদস্য ও স্ত্রীর বড় ভাইয়ের ছেলেকে জড়িত রেখে অবৈধভাবে একটি প্রবাসী নামের অ্যাপস চালুর অনুমোদন দেন, যা পরে মানবপাচার চক্রকে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করে।
বাদীর দাবি, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে ভয়ভীতি ও জোরজবরদস্তির মাধ্যমে ৮৪১ জনের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা করে মোট ১২ কোটি ৫৬ লাখ এক হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পাশাপাশি অন্যান্য এজেন্সির কাছ থেকেও ২৪ হাজার কোটি টাকার চাঁদা আদায় করে আত্মসাৎ করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
সব মিলিয়ে মামলাটি এখন আবার নতুন করে তদন্তের আওতায় আসায়, সাবেক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জড়িত থাকার অভিযোগে আলোচনায় এসেছে ঘটনাটি।


































