বাতাস থেকে পানি! এমআইটির নতুন প্রযুক্তি মরুভূমিতেও জীবন বাঁচাবে

বাতাস থেকে পানি! এমআইটির নতুন প্রযুক্তি মরুভূমিতেও জীবন বাঁচাবে ছবি : সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১২:০৯, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পানিশূন্য মরুভূমি বা চরম শুষ্ক অঞ্চলে বেঁচে থাকা সবসময়ই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। তবে এখন আধুনিক প্রযুক্তি সেই চ্যালেঞ্জকে অনেক সহজ করে তুলতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)-এর গবেষকরা এমন একটি যন্ত্র তৈরি করেছেন, যা সরাসরি বাতাস থেকে খাওয়ার উপযোগী পানি সংগ্রহ করতে সক্ষম।

যন্ত্রের কার্যপ্রণালি:
এটি দেখতে অনেকটা জানালার মতো। ভেতরে রয়েছে অভিনব প্রযুক্তি ও হাইড্রোজেল নামের বিশেষ শোষক পদার্থ, যা লবণের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে। বাইরের অংশ কাচ দিয়ে ঘেরা। হাইড্রোজেল বাতাস থেকে জলীয় বাষ্প শোষণ করে জমা রাখে। এরপর সূর্যের তাপে এই বাষ্প কাচের দেয়ালে ক kondense হয়ে পানির ফোঁটা আকারে নিচের পাত্রে পড়ে যায়। এই প্রক্রিয়ার জন্য বিদ্যুতের কোনো প্রয়োজন নেই; শুধুমাত্র সূর্যের তাপই যথেষ্ট।

কতটা পানি পাওয়া যায়?
এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকা যন্ত্রটি মরুভূমির মতো শুষ্ক এলাকায় দিনে প্রায় এক কাপের দুই-তৃতীয়াংশ বিশুদ্ধ পানি উৎপাদন করতে সক্ষম। এমআইটির অধ্যাপক সুয়ানহে ঝাও জানিয়েছেন, যদিও পরিমাণ কম মনে হতে পারে, চরম পানিশূন্য পরিবেশে এটি জীবন বাঁচানোর জন্য যথেষ্ট।

পুরোনো কৌশলের আধুনিক রূপ:
বাতাস থেকে পানি সংগ্রহের পদ্ধতি শত শত বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, কিন্তু আগে কার্যকর হতে বাতাসে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা থাকা প্রয়োজন। এমআইটির নতুন প্রযুক্তির বিশেষত্ব হলো, এটি অত্যন্ত শুষ্ক পরিবেশেও পানি তৈরি করতে পারে।

হাইড্রোজেলের গুরুত্ব:
হাইড্রোজেল অনেকটা স্পঞ্জের মতো, যা নিজের আকারের তুলনায় দশগুণ পর্যন্ত ফুলে উঠতে পারে। এটি সস্তা এবং কম শক্তি খরচ করে। শিশুর ডায়াপারেও হাইড্রোজেল ব্যবহার করা হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মরুভূমি অঞ্চলে পানির অভাব মেটাতে হাইড্রোজেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

চিলির অভিজ্ঞতা:
চিলির আতাকামা মরুভূমিতে হাইড্রোজেল পরীক্ষার সময় দেখা গেছে, লবণের সঙ্গে মিশিয়ে প্রতি বর্গমিটার জায়গা থেকে প্রায় ০.৩৮ লিটার বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।

ভবিষ্যতের আশা:
যন্ত্রটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও বিজ্ঞানীরা আশাবাদী। শুষ্ক মরুভূমি থেকে বাতাস থেকেই নিরাপদ পানি সংগ্রহ করা সম্ভব হলে, এটি মানবজাতির জন্য এক যুগান্তকারী আশীর্বাদ হতে পারে।

সূত্র : সিএনএন

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement