গোসল ফরজ অবস্থায় মুসলিম পুরুষদের যেসব কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি

গোসল ফরজ অবস্থায় মুসলিম পুরুষদের যেসব কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি

TheBusinessDaily

Published : ০২:২৩, ৩০ জুন ২০২৫

ইসলামী শরীয়ত মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনে পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায়, কোনো ব্যক্তি যদি জানাবত বা অপবিত্র অবস্থায় থাকেন—যা সাধারণত সহবাস, স্বপ্নদোষ বা হায়েজ-নেফাসের পর ঘটে—তাহলে তার ওপর গোসল ফরজ হয়। এই ফরজ গোসল না করেই কিছু নির্দিষ্ট কাজ করা ইসলামে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ বলে গণ্য করা হয়েছে।

যেসব কাজ একেবারে নিষিদ্ধ:

১. নামাজ আদায়:
অপবিত্র অবস্থায় নামাজ পড়া শরীয়তসম্মত নয়। পবিত্রতা অর্জন ব্যতীত কোনো নামাজই গ্রহণযোগ্য হবে না।

২. কাবা শরীফে তাওয়াফ:
হজ বা উমরার সময় পবিত্র কাবা ঘরের তাওয়াফ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কিন্তু জানাবত অবস্থায় এ কাজ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।

৩. কোরআন স্পর্শ ও পাঠ:
অপরিষ্কার শরীর নিয়ে কোরআনের আয়াত স্পর্শ করা বা তিলাওয়াত করাও নিষিদ্ধ। যদিও কিছু আলেম মনে করেন, মুখস্থ তিলাওয়াত কিছু ক্ষেত্রে করা যেতে পারে, তবে সেটিও বিতর্কিত।

৪. মসজিদে প্রবেশ:
অপবিত্র অবস্থায় মসজিদের পবিত্র পরিবেশে প্রবেশ করাও শরীয়তবিরোধী। যদিও ওজু করে দরজার বাইরে বসা বা মসজিদের বাইরের আঙিনায় থাকা কিছুটা ভিন্ন বিষয়ে পড়ে।

যেসব কাজ করা অনুচিত হলেও নিষিদ্ধ নয়:

ঘরকন্নার কাজ, চলাফেরা, কারও সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ বা বাজারে যাওয়ার মতো দৈনন্দিন কাজগুলো সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ নয়। তবে ধর্মীয় দিক থেকে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাই শ্রেয়।

রাসূল (সা.) ও সাহাবাদের শিক্ষা:

হাদিসে এসেছে, একবার আবু হুরাইরা (রা.) জানাবতের অবস্থায় ছিলেন। এমন সময় রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সামনে পড়ে গেলে, তিনি লজ্জায় সরে গিয়ে গোসল করে এসে রাসূল (সা.)-এর কাছে ফেরত আসেন। তখন রাসূল (সা.) বলেন, "সুবহানাল্লাহ! মুসলমান কখনোই অপবিত্র হয় না।" (সহিহ বুখারি, হাদিস ২৭৯)।

আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, সহবাসের পর যদি কেউ ঘুমাতে বা খেতে চান, তাহলে গোসল না করেও অন্তত ওজু করা সুন্নত। (সহিহ মুসলিম, হাদিস ৩০৫)

শেয়ার করুনঃ
Advertisement