তিন মাসে কোটিপতি আমানতকারী কমেছে ৭১৯ জন: বাংলাদেশ ব্যাংক

গণঅভ্যুথানের পর দেশে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতায় ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছিল। এর প্রভাবে আমানত যেমন কমছিল, তেমনি ব্যাংকে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যাও কমে যায়। পরে ডিসেম্বরে তা কিছুটা বেড়েছিল। 

এখন ডিসেম্বরের তুলনায় মার্চে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা আবার কমেছে। ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত ৩ মাসে কোটিপতি আমানকারী কমেছে ৭১৯ জন। তবে সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত ৬ মাসে কোটিপতি আমানকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৪২৩৫ জন। 

এদিকে সার্বিকভাবে ডিসেম্বরের তুলনায় মার্চে আমানত বেড়েছে ২.১১ শতাংশ। ঋণপ্রবাহ বেড়েছে ১.৭৭ শতাংশ; যা সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধির চেয়ে কম।

মঙ্গলবার (৩ জুন) কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

উল্লে প্রতি ৩ মাস পরপর ব্যাংক খাতের আমানত ও ঋণপ্রবাহ নিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

প্রতিবেদনের তথ্যে দেখা যায়, ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারীদের হিসাব ছিল এক লাখ ২২ হাজার ৮১টি। মার্চে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার ৩৬২টি। আলোচ্য ৩ মাসে কোটিপতি আমানতকারীর হিসাব কমেছে ৭১৯টি। 

বড় আমানতকারীরা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়ায় ও ব্যবসায়িক মন্দার কারণে কোটিপতি আমানতকারী কমেছে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এদিকে সেপ্টেম্বরের তুলনায় মার্চে এই ৬ মাসে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে কোটিপতি আমানতকারী ছিল এক লাখ ১৭ হাজার ১২৭ জন। এ হিসাবে ৬ মাসে বেড়েছে ৪২৩৫ জন।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, এক কোটি টাকার বেশি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানতকারী রয়েছেন ৯৫ হাজার ৯৩২ জন জন। ৫ কোটির বেশি থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানত রয়েছে ১২ হাজার ৯৯১ জনের। ১০ কোটির বেশি থেকে ১৫ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানতের হিসাবধারী রয়েছেন ৪৪৪১ জন। 

১৫ কোটি টাকার বেশি থেকে ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানতকারী রয়েছেন ২০৩৩ জন। ২০ কোটি টাকার বেশি থেকে ২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানতকারী রয়েছেন ১৩৫৪ জন। ২৫ কোটি টাকার বেশি থেকে ৩০ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানতকারীর হিসাব রয়েছে ৯৬০টি। ৩০ কোটি টাকার বেশি থেকে ৩৫ কোটি টাকার আমানতকারী রয়েছেন ৫৮৩ জন। 

৩৫ কোটি টাকার বেশি থেকে ৪০ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানতকারী রয়েছেন ৩৭৭ জন। ৪০-৫০ কোটি টাকার আমানতকারী রয়েছেন ৭৬৯ জন এবং পঞ্চাশ কোটি টাকার বেশি আমানতকারী রয়েছেন ১৯২২ জন।

প্রতিবেদনের তথ্যে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আমানত বেড়েছিল ৩.২ শতাংশ। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বেড়েছে ২.১১ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে আমানত কমেছে। একই সময়ে ঋণপ্রবাহ ৩.৮৯ শতাংশ থেকে কমে ১.৭৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।