ভারতের ১২ ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের

ভারতের ১২ ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

Published : ১৭:১৯, ৮ মে ২০২৫

জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জেরে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের কয়েকটি স্থানে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দিয়েছে ভারত। এ হামলার কঠিন জবাব দিতে উঠে-পড়ে লেগেছে পাকিস্তানও। প্রতিশোধের নেশায় রীতিমতো ফুঁসছে তারা। 

এরই মধ্যে ভারতকে কঠিন জবাব দিতে প্রয়োজনীয় যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির কাছ থেকে অনুমতিও পেয়ে গেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ভারতকে তার হামলার চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুঙ্কার ছেড়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।

বুধবার (৭ মে) রাতেও ফের আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছে ভারত। পাকিস্তানের একাধিক জায়গায় ড্রোন পাঠিয়ে হামলার চেষ্টা করেছে তারা। তবে ভারতের এ প্রচেষ্টা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর।

তারা বলছে, হামলা চালানোর জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশ করা অন্তত ১২টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে তারা।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এক রাতে অন্তত ১২টি ভারতীয় ড্রোন তাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করেছে এবং সেগুলোকে তারা একাধিক স্থানে গুলি করে নামাতে সক্ষম হয়েছে। এই ঘটনায় এক বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং ৪ জন পাক সেনা আহত হয়েছেন।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মিডিয়া উইং আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, গত রাতে ভারত ফের আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছে। একাধিক জায়গায় ড্রোন পাঠিয়ে হামলার চেষ্টা করেছে। এর মধ্যে একটি ড্রোন লাহোরের কাছে একটি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। 

তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী যথাযথ পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে এবং এখনও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পৃথক আরেক প্রতিবেদনে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী ব্যাপক সতর্ক রয়েছে এবং এখন পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ভারতের ১২টি হারোপ ড্রোন ধ্বংস করেছে পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী। 

জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী আরও বলেছেন, সাম্প্রতিক সংঘর্ষে ভারত বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে, সীমান্ত এলাকায় তারা বড় ক্ষতির শিকার হয়েছে। এরপর ভারত যেন সম্পূর্ণভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। যেখানে স্বাভাবিক বুদ্ধিবৃত্তিক পথে আসা উচিত ছিল, সেখানে ভারত উল্টো উত্তেজনা আরও বাড়াচ্ছে, যা তাদের অহংকার-যুক্ত মনোভাবেরই প্রকাশ।

আইএসপিআর প্রধান বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে ভারত কতটা উসকানিমূলক আচরণ করছে। এমন এক সময়ে এই সামরিক আগ্রাসন চালানো হচ্ছে, যখন পুরো অঞ্চলটিই অত্যন্ত স্পর্শকাতর অবস্থায় রয়েছে। এর ফলে শুধু এই অঞ্চলের নয়, পুরো বিশ্বের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে। 

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত।

পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেওয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও।

এরপর থেকে দুদেশের পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে পরিস্থিতি, রীতিমতো যুদ্ধের রূপ ধারণ করেছে যা এখন। 

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement